১০:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাত নামলেই গ্রামীণ জনপদে হানা দিচ্ছে চোরের দল

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ১০:৫৭:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৪৪ Time View

 

বগুড়ার নন্দীগ্রামে শীত না আসতেই গরু চোরের উৎপাত বেড়েছে। রাত নামলেই গ্রামীণ জনপদে হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। বহিরাগতদের আনাগোনাও বেড়েছে। দিনের বেলায় গোয়ালঘর টার্গেট আর রাতের আঁধারে গরু লুট।

চুরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পিকআপ, মিনি ট্রাক এবং নসিমন। অধিকাংশ ঘটনায় থানা পুলিশে অভিযোগ দেননি ভুক্তভোগীরা। গরু হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে।
কৃষক ও খামারিরা বলছেন, শীত এলে এই উপজেলায় গরু চুরির প্রবণতা বেড়ে যায়। রাত জেগে পাহারা দিয়েও লাভ হয়না। সংঘবদ্ধ চোরের দল একটু সুযোগ পেলেই গরু চুরি করে। এ বছর শীতের আগেই লাগাতার চুরির ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ ও আতঙ্কিত। নিরাপত্তা জোরদারের জন্য পুলিশ তেমন কোনো কার্যক্রম নেয়নি বলেও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। তারা চুরি রোধে কঠোর পদক্ষেপ চান।
তবে পুলিশের দাবি, চুরির প্রবণতা ঠেকাতে নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। শহর থেকে গ্রামীণ জনপদেও তৎপর রয়েছে নন্দীগ্রাম থানা ও কুমিড়া পুলিশ।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার হাটকড়ই পোতাপাড়া গ্রামের একটি গোয়াল ঘরের সিঁধ কেটে পাঁচটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। চুরির পর নিঃস্ব ভুক্তভোগী আশরাফুল ইসলাম। কেউ তার সামনে গেলেই কেঁদে উঠছেন। পথে বসলো তার গোটা পরিবার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, পুলিশকে বলেছি আমার সম্পদ (গরু) ফিরিয়ে দিন। আমি সিএনজি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। বাড়িতে দেশি ও বিদেশী জাতের গরু পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন বুনেছিলাম। তিনি প্রতিদিনের মতো গোয়াল ঘরে পাঁচটি গরু তালাবদ্ধ রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের আঁধারে দেয়াল কেটে (সিঁধ কেটে) চোরেরা লুট করে নিয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, গত ২৭ জুলাই রাতে নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের দেওতা গ্রামের লাল মিয়ার গোয়ালঘর থেকে দুটি গরু এবং আব্দুস সামাদের তিনটি গরু চুরি হয়। চোরেরা গোয়াল ঘরের সিঁধ ও তালা কেটে ৫ লাখ টাকা মূল্যের গরু লুট করে। এরআগে ২০ এপ্রিল গ্রামধুমা এলাকায় সেলিনা বেওয়ার দুটি গরু লুট করে দূর্বৃত্তরা। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে দামরুল গ্রামের জিয়াউল হক খাজার গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়। পৌর এলাকার বৈলগ্রাম উত্তরপাড়ার সোহরাব হোসেন বাবুলের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে ৯টি গরু চুরি ও কাথম পূর্বপাড়ার আনছার আলীর গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি করে সংঘবদ্ধ চোরের দল।
নন্দীগ্রাম থানার ওসি মো. ফইম উদ্দিন জানান, তিনি এ উপজেলায় নবাগত। গরু চুরির ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক থানায় তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। যেকোনো ধরনের অপরাধ প্রবণতা ঠেকাতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। গ্রামীণ জনপদে টহল ও তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

রাত নামলেই গ্রামীণ জনপদে হানা দিচ্ছে চোরের দল

Update Time : ১০:৫৭:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

 

বগুড়ার নন্দীগ্রামে শীত না আসতেই গরু চোরের উৎপাত বেড়েছে। রাত নামলেই গ্রামীণ জনপদে হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। বহিরাগতদের আনাগোনাও বেড়েছে। দিনের বেলায় গোয়ালঘর টার্গেট আর রাতের আঁধারে গরু লুট।

চুরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পিকআপ, মিনি ট্রাক এবং নসিমন। অধিকাংশ ঘটনায় থানা পুলিশে অভিযোগ দেননি ভুক্তভোগীরা। গরু হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে।
কৃষক ও খামারিরা বলছেন, শীত এলে এই উপজেলায় গরু চুরির প্রবণতা বেড়ে যায়। রাত জেগে পাহারা দিয়েও লাভ হয়না। সংঘবদ্ধ চোরের দল একটু সুযোগ পেলেই গরু চুরি করে। এ বছর শীতের আগেই লাগাতার চুরির ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ ও আতঙ্কিত। নিরাপত্তা জোরদারের জন্য পুলিশ তেমন কোনো কার্যক্রম নেয়নি বলেও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। তারা চুরি রোধে কঠোর পদক্ষেপ চান।
তবে পুলিশের দাবি, চুরির প্রবণতা ঠেকাতে নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। শহর থেকে গ্রামীণ জনপদেও তৎপর রয়েছে নন্দীগ্রাম থানা ও কুমিড়া পুলিশ।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার হাটকড়ই পোতাপাড়া গ্রামের একটি গোয়াল ঘরের সিঁধ কেটে পাঁচটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। চুরির পর নিঃস্ব ভুক্তভোগী আশরাফুল ইসলাম। কেউ তার সামনে গেলেই কেঁদে উঠছেন। পথে বসলো তার গোটা পরিবার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, পুলিশকে বলেছি আমার সম্পদ (গরু) ফিরিয়ে দিন। আমি সিএনজি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। বাড়িতে দেশি ও বিদেশী জাতের গরু পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন বুনেছিলাম। তিনি প্রতিদিনের মতো গোয়াল ঘরে পাঁচটি গরু তালাবদ্ধ রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের আঁধারে দেয়াল কেটে (সিঁধ কেটে) চোরেরা লুট করে নিয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, গত ২৭ জুলাই রাতে নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের দেওতা গ্রামের লাল মিয়ার গোয়ালঘর থেকে দুটি গরু এবং আব্দুস সামাদের তিনটি গরু চুরি হয়। চোরেরা গোয়াল ঘরের সিঁধ ও তালা কেটে ৫ লাখ টাকা মূল্যের গরু লুট করে। এরআগে ২০ এপ্রিল গ্রামধুমা এলাকায় সেলিনা বেওয়ার দুটি গরু লুট করে দূর্বৃত্তরা। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে দামরুল গ্রামের জিয়াউল হক খাজার গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়। পৌর এলাকার বৈলগ্রাম উত্তরপাড়ার সোহরাব হোসেন বাবুলের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে ৯টি গরু চুরি ও কাথম পূর্বপাড়ার আনছার আলীর গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি করে সংঘবদ্ধ চোরের দল।
নন্দীগ্রাম থানার ওসি মো. ফইম উদ্দিন জানান, তিনি এ উপজেলায় নবাগত। গরু চুরির ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক থানায় তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। যেকোনো ধরনের অপরাধ প্রবণতা ঠেকাতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। গ্রামীণ জনপদে টহল ও তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।